

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসন আরও ৩১ বাংলাদেশিকে দেশে ফেরত পাঠিয়েছে। এর আগে চলতি বছরে মোট ২২৬ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠানো হয়েছিল।
সোমবার (৮ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৭টার দিকে একটি বিশেষ মার্কিন সামরিক উড়োজাহাজে তারা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান। ফেরত পাঠানোর সময় তাদের হাত ও পায়ে হ্যান্ডকাফ–শেকল পরানো ছিল।
ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর অবৈধ অভিবাসী ফেরত পাঠানোর অভিযান আরও কঠোর হয়। এর অংশ হিসেবে বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশের বহু নাগরিককে দেশে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
বিমানবন্দরে নেমে ব্র্যাকের পক্ষ থেকে ফেরত আসা যাত্রীদের পরিবহন ব্যবস্থা ও তাৎক্ষণিক সহায়তা দেওয়া হয়। তাদের বেশিরভাগই নোয়াখালী জেলার বাসিন্দা, পাশাপাশি সিলেট, ফেনী, শরিয়তপুর, কুমিল্লা সহ বেশ কিছু জেলার মানুষও রয়েছেন।
ফিরে আসা বাংলাদেশিরা জানান, প্রায় ৬০ ঘণ্টা ধরে তাদের হাতকড়া ও পায়ে শেকল পরিয়ে রাখা হয়। ঢাকায় নামার পর বিমানবন্দরে তাদের শেকল খোলা হয়।
ব্র্যাকের মাইগ্রেশন ও ইয়ুথ প্ল্যাটফর্মের সহযোগী পরিচালক শরিফুল হাসান জানান, ফেরত আসা ৩১ জনের মধ্যে অন্তত সাতজন বিএমইটি’র ছাড়পত্র নিয়ে ব্রাজিলে গিয়েছিলেন এবং পরে সেখান থেকে মেক্সিকো হয়ে অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করেন। যুক্তরাষ্ট্রে থাকার আবেদন আইনি প্রক্রিয়ায় বাতিল হওয়ায় তাদের ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তিনি বলেন, “নথিহীন কাউকে ফেরত পাঠানো স্বাভাবিক, কিন্তু এত দীর্ঘসময় হাতকড়া ও শেকল পরিয়ে রাখা সম্পূর্ণ অমানবিক।”
তিনি আরও বলেন, ব্রাজিলে কর্মী পাঠানোর নামে যাদের পাঠানো হচ্ছে তাদের বেশিরভাগই সেখান থেকে যুক্তরাষ্ট্রে ঢোকার চেষ্টা করেন। এই একেকজনকে ৩০–৩৫ লাখ টাকা পর্যন্ত খরচ করতে হচ্ছে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত সবাই শূন্য হাতে ফিরে আসছেন। যে এজেন্সিগুলো তাদের পাঠিয়েছে এবং অনুমোদন প্রক্রিয়ায় যারা জড়িত—তাদের জবাবদিহির আওতায় আনা উচিত।
শরিফুল হাসান সতর্ক করে বলেন, নতুন করে ব্রাজিলে কর্মী পাঠানোর অনুমতি দেওয়ার আগে সরকারকে আরও সতর্ক হতে হবে। ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর থেকে অবৈধ অভিবাসীদের ফেরত পাঠানোর কার্যক্রম আরও জোরালো হয়েছে। চলতি বছরের ২৮ নভেম্বর ৩৯ জন, ৮ জুন ৪২ জন এবং ৬ মার্চ থেকে ২১ এপ্রিল পর্যন্ত আরও কমপক্ষে ৩৪ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠানো হয়।
মার্কিন আইনে বলা আছে, বৈধ কাগজপত্র ছাড়া থাকা অভিবাসীদের আদালতের রায় বা প্রশাসনিক নির্দেশে দেশে ফেরত পাঠানো যায়। আশ্রয়ের আবেদন বাতিল হলে আইসিই (ICE) প্রত্যাবাসনের ব্যবস্থা করে। সাম্প্রতিক সময়ে প্রক্রিয়াটি দ্রুত হওয়ায় চার্টার্ড ও সামরিক ফ্লাইট ব্যবহারের পরিমাণ বেড়েছে।
মন্তব্য করুন
