

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


জন্মসূত্রে আমরা বাংলাদেশি। কিন্তু বিদেশে স্থায়ীভাবে বসবাস বা নাগরিকত্ব পাওয়া আজ অনেকের স্বপ্ন। উচ্চশিক্ষা, ভালো চাকরি বা বড় বিনিয়োগ ছাড়া এটি সব সময় সহজ হয় না।
তবে অনেক সময় প্রেম বা বিয়ে পথ খুলে দেয়। বিদেশি জীবনসঙ্গীকে বেছে নিয়ে কেউ ভালোবাসার টানে বিয়ে করেন, আবার কেউ বিয়ের মাধ্যমে বৈধভাবে নতুন দেশের নাগরিকত্ব পাওয়ার সুযোগ খোঁজেন।
তাহলে প্রশ্ন হলো—বিয়ে করে কি নাগরিকত্ব পাওয়া সম্ভব? হ্যাঁ, পৃথিবীর কিছু দেশ আছে, যেখানে নাগরিকদের বিয়ে করলে বৈধ প্রক্রিয়ায় নতুন দেশের নাগরিকত্ব নেওয়া যায়। চলুন জেনে নিই এমন কয়েকটি দেশ সম্পর্কে:
ব্রাজিল : ব্রাজিলের নাগরিককে বিয়ে করলে এক বছরের টানা বসবাসের পর নাগরিকত্বের আবেদন করা যায়। এখানে দ্বৈত নাগরিকত্ব অনুমোদিত, অর্থাৎ বাংলাদেশের নাগরিকত্ব ত্যাগ করতে হয় না।
স্পেন : স্পেনের নাগরিককে বিয়ে করলে এক বছরের টানা বসবাসের পর নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করা যায়। আবেদন প্রক্রিয়ায় প্রাথমিক স্প্যানিশ ভাষা দক্ষতা, দেশটির সংস্কৃতি সম্পর্কে জ্ঞান এবং বিয়ের বৈধ সনদ প্রয়োজন।
ফ্রান্স: ফ্রান্সের নাগরিক হতে চাইলে চার বছরের টানা বৈবাহিক সম্পর্কের পাশাপাশি ফ্রান্সে বসবাস করতে হয়। বিদেশে বিয়ে করলে সময়সীমা আরও বাড়তে পারে। একবার নাগরিক হলে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সুবিধা পাওয়া যায়।
সার্বিয়া : সার্বিয়ায় নাগরিকত্ব পেতে হলে তিন বছরের বিবাহিত সম্পর্ক এবং দেশটিতে স্থায়ীভাবে বসবাস প্রয়োজন। নিয়ম কিছুটা নমনীয়ভাবে প্রয়োগ হয়, ফলে সহজেই নাগরিকত্ব পাওয়া সম্ভব।
পর্তুগাল: পর্তুগিজ নাগরিকের সঙ্গে তিন বছরের বিবাহিত সম্পর্ক থাকলেই নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করা যায়। স্থায়ী বসবাসের প্রয়োজন নেই, তবে ভাষা ও সংস্কৃতির জ্ঞান সুবিধা দেয়।
পোল্যান্ড: পোল্যান্ডে নাগরিককে বিয়ে করলে তিন বছর পর এবং পোল্যান্ডে দুই বছরের টানা বসবাসের পর নাগরিকত্বের আবেদন করা যায়। ভাষা পরীক্ষায় পোলিশ জানা বাধ্যতামূলক। এখানে আয়কর হার ১৮–৩২% পর্যন্ত হতে পারে।
তুরস্ক: তুরস্কে বিয়ের তিন বছরের বৈধ দাম্পত্য জীবন কাটালেই নাগরিকত্বের আবেদন করা যায়। ভাষা বা সংস্কৃতি জানার প্রয়োজন নেই। তুরস্কের পাসপোর্ট দিয়ে বিশ্বের ১১০টিরও বেশি দেশে ভিসা ফ্রি বা ভিসা অন অ্যারাইভাল সুবিধা পাওয়া যায়।
কেপ ভার্ড: পশ্চিম আফ্রিকার দ্বীপরাষ্ট্র কেপ ভার্ডের নাগরিককে বৈধভাবে বিয়ে করলে নাগরিকত্বের আবেদন করা যায়।
সুইজারল্যান্ড: সুইস নাগরিককে বিয়ে করলে তিন বছরের বিবাহিত সম্পর্ক থাকলেই পাঁচ বছর দেশের ভিতরে বসবাসের পর নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করা যায়। দেশের বাইরে থাকলেও ছয় বছরের বৈবাহিক সম্পর্ক অতিক্রান্ত হলে আবেদন করা যায়।
বিয়ে জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত। যদি ভালোবাসার টানে বিদেশি সঙ্গীকে বেছে নেন এবং তা নাগরিকত্বের সুযোগ দেয়, তবে তা হতে পারে বড় সুযোগ। তবে শুধুমাত্র নাগরিকত্বের জন্য সম্পর্ক শুরু করলে তা কেবল কাগজে সীমিত থাকবে, মানসিক শান্তি মিলবে না।
সূত্র: নোম্যাড ক্যাপিটালিস্ট, গ্লোবাল সিটিজেন সলিউশনস
মন্তব্য করুন
