রবিবার
০৯ নভেম্বর ২০২৫, ২৫ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
রবিবার
০৯ নভেম্বর ২০২৫, ২৫ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শান্তিচুক্তি স্বাক্ষর: আর মারামারি করবে না ঢাকা-আইডিয়াল কলেজ শিক্ষার্থীরা

এনপিবি ডেস্ক
প্রকাশ : ০৯ নভেম্বর ২০২৫, ০২:৫২ পিএম
ধানমন্ডি আইডিয়াল কলেজ ও ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে শান্তিচুক্তি স্বাক্ষর
expand
ধানমন্ডি আইডিয়াল কলেজ ও ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে শান্তিচুক্তি স্বাক্ষর

ধানমন্ডি আইডিয়াল কলেজ ও ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে চলা বিরোধের অবসান ঘটেছে অবশেষে।

নিউমার্কেট থানা পুলিশের মধ্যস্থতায় কলেজ দুটির মধ্যে শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। রবিবার (৯ নভেম্বর) দুপুর ১২টায় ঢাকা কলেজের আ ন ম নজিব উদ্দিন খুররম অডিটোরিয়ামে অধ্যক্ষ অধ্যাপক এ কে এম ইলিয়াসের সভাপতিত্বে এ শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।

এ সময় দুই কলেজের শিক্ষার্থীরা পরস্পরকে ফুল ও মিষ্টি উপহার দিয়ে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।

ঢাকা কলেজের উচ্চমাধ্যমিক দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ইস্রাফিল মহিম বলেন, বিগত কয়েক বছর ধরে কিছু বিচ্ছিন্ন এবং অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার কারণে ঢাকা কলেজ এবং আইডিয়াল কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে একটি দূরত্ব এবং ভুল বোঝাবুঝির পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল।

অনেক সময় আমরা মুখোমুখি অবস্থানেও গিয়েছি। কিন্তু আমরা কেউই এই সম্পর্ককে এমন অবস্থায় দেখতে চাই না। এই সম্পর্ক বন্ধুত্বের, সহযোগিতার, ভ্রাতৃত্বের এটাই হওয়া উচিত।

সেই লক্ষ্যকে সামনে রেখে, দুই কলেজের শিক্ষকবৃন্দের সম্মিলিত উদ্যোগে আজ আমরা একত্রিত হয়েছি মেলবন্ধনের এই সুন্দর আয়োজনে।

তিনি আরও বলেন, জুলাই- আগষ্টের গণঅভ্যুত্থানে আমরা মিলেমিশে রাজপথে সাইন্স ল্যাবে ফ্যাসিবাদের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে লড়েছিলাম।

আমরা আশা করি এখন থেকে সবাই একসাথে সুন্দর বাংলাদেশ বিনির্মাণে ভূমিকা রাখব। বন্ধুত্ব, সহযোগিতা এবং ভ্রাতৃত্ব বন্ধনের ভিত্তিতে আমরা এগিয়ে যাবো।

আইডিয়াল কলেজের শিক্ষার্থী তৌফিক বলেন, বিভিন্ন ভুল বোঝাবুঝি ও কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার কারণে আমাদের মধ্যে দূরত্ব তৈরি হয়েছিল। আজ এখানে আমরা সবাই একত্রিত হয়ে এই ভুল ধারণা পরিষ্কার করতে এসেছি। আমরা সবাই ভাই-ভাই।

ভাইদের মধ্যে হয়তো কখনো ছোটখাট ভুল বোঝাবুঝি হতে পারে, কিন্তু আমরা চাই না সেটি শত্রুতায় পরিণত হোক। আমাদের ভবিষ্যৎ, আমাদের শিক্ষকদের মান-সম্মান, এবং আমাদের নিজস্ব পরিচয় এসব কিছুই আমাদের নিজেদের হাতে।

একে অপরকে সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করে তৌফিক বলেন, এখন আমাদের দায়িত্ব এই শান্তিচুক্তি বা সমঝোতা আগামীদিনে ধরে রাখা। আমাদের চলাচল ও পড়াশোনা সবকিছুতে আমরা যেন একে অপরকে ভাইয়ের মতো সহযোগিতা করি।

আমরা মিলেমিশে থাকলে পরিবেশ সুন্দর থাকবে এবং আমরা নিশ্চিন্তে পড়াশোনা করতে পারব। আমি সবাইকে অনুরোধ করছি এই বন্ধন, ভ্রাতৃত্ব ও শান্তি শেষ পর্যন্ত যেন বজায় থাকে।

ধানমন্ডি আইডিয়াল কলেজের অধ্যক্ষ মুহাম্মদ রেযওয়ানুল হক বলেন, আজকে আমাদের জন্য খুবই আনন্দের একটি দিন। কেননা আমরা বিগত দিনে বিভিন্ন সময়ে আমাদের শিক্ষার্থীরা ঝামেলায় জড়িয়েছে। আমি মনে করি, মোবাইল ফোনই এই ঝামেলার জন্য দায়ী।

মাঝে মধ্যেই দেখা যায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক কলেজ আরেক কলেজকে নিয়ে ট্রল করে। এই মোবাইল ফোনই পারিবারিক সামাজিক সকল ক্ষেত্রেই সমস্যা সৃষ্টি করে।

তার মানে এই নয় যে মোবাইল ফেলে দিতে হবে? তাই শিক্ষার্থীদের প্রতি অনুরোধ, আপনারা আর কোনো প্রকার ঝামেলায় না জড়িয়ে শান্তিপূর্ণ ভাবে বসবাস করবেন।

এ বিষয়ে ঢাকা কলেজ অধ্যক্ষ এ কে এম ইলিয়াস বলেন, ঢাকা কলেজ এবং আইডিয়াল কলেজ দুটিই ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান। দুই কলেজ সুনামের সাথে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে।

সাম্প্রতিক সময়ে কিছু ভুল বোঝাবুঝি ও সংঘর্ষের কারণে আমাদের শিক্ষাজীবন ও সাধারণ মানুষের স্বাভাবিক জীবন ব্যাহত হচ্ছিল।

এ অবস্থার অবসান খুবই জরুরি ছিল। তাই আজকের এই শান্তি ও সম্প্রীতির উদ্যোগকে আমরা আন্তরিকভাবে স্বাগত জানাই।

তিনি বলেন, আমরা চাই- দুই কলেজের মধ্যে বন্ধুত্ব, ভ্রাতৃত্ব এবং শিক্ষা বিনিময় আরও জোরদার হোক। সাংস্কৃতিক ও শিক্ষামূলক কার্যক্রমে আমরা একে অপরের সহযোগী হব।

ভবিষ্যতে কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটলে দুই পক্ষই অপরাধীকে শনাক্ত করবে এবং সমস্যার সমাধান করবে কোনো প্রকার সাধারণ বিরোধে পুরো প্রতিষ্ঠান জড়াবে না।

আমাদের মূল লক্ষ্য হলো শিক্ষা গ্রহণ এবং শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখা। তাই আগের মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তি করে আমরা সম্প্রীতির পথেই এগিয়ে যেতে চাই।

google news সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন