শনিবার
২৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শনিবার
২৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ক্ষমা না চাইলে সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি জবি উপাচার্যের  

জবি প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৭:৪৩ পিএম
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম
expand
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ২০২৫–২৬ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক ‘এ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা চলাকালে উপাচার্যের পরিদর্শনের সময় এক সাংবাদিককে হেনস্তা ও প্রশ্নফাঁসের অভিযোগে লাঞ্ছিত করার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ, তথ্য ও প্রকাশনা দপ্তরের পরিচালক ও সহযোগী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আনওয়ারুস সালামের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে।

এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার কাছে ক্ষমা না চাইলে ওই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে—এমন হুমকি দিয়েছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম।

শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে 'এ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা চলাকালে গণিত বিভাগের ১১৯ নম্বর কক্ষে উপাচার্যের পরিদর্শনের সময় 'বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের' বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি অনুপম মল্লিক আদিত্যসহ কয়েকজন সাংবাদিক সেখানে উপস্থিত ছিলেন।

ভুক্তভোগী সাংবাদিক ও প্রত্যক্ষদর্শীদের জানান, সংবাদ প্রকাশের জন্য ছবি সংগ্রহ করতে উপাচার্যের সঙ্গে পরীক্ষাকক্ষে প্রবেশ করেন অনুপম মল্লিক আদিত্য ও আরও দুই সাংবাদিক। সে সময় সেখানে জনসংযোগ দপ্তরের পরিচালক, একজন ক্যামেরাম্যান এবং অন্যান্য সাংবাদিকরাও উপস্থিত ছিলেন।

এ সময় ছবি তুলতে গেলে জনসংযোগ, তথ্য ও প্রকাশনা দপ্তরের পরিচালক ড. মুহাম্মদ আনওয়ারুস সালাম হঠাৎ ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন এবং সাংবাদিক অনুপম মল্লিক আদিত্যকে প্রশ্নফাঁসের সঙ্গে জড়িত বলে অভিযুক্ত করেন। পরে তাঁকে পরীক্ষাকক্ষ ত্যাগ করতে বলা হয়।

পরবর্তীতে ওই সাংবাদিককে উপাচার্যের কার্যালয়ে ডেকে নেওয়া হয়। সেখানে উপাচার্য সাংবাদিককে ড. আনওয়ারুস সালামের কাছে ক্ষমা চাইতে নির্দেশ দেন। অন্যথায় তাঁর বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।

এ বিষয়ে সাংবাদিক অনুপম মল্লিক আদিত্য বলেন, তিনি শুধুমাত্র পেশাগত দায়িত্ব পালনের জন্য ছবি তুলছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও জনসংযোগ দপ্তর থেকে সময়মতো তথ্য ও ছবি সরবরাহ করা হলে সাংবাদিকদের পরীক্ষাকক্ষে প্রবেশের প্রয়োজন হতো না বলেও তিনি উল্লেখ করেন। ছবি তোলার কারণে একজন দায়িত্বশীল শিক্ষক কর্তৃক ‘প্রশ্নফাঁসকারী’ আখ্যা দেওয়াকে তিনি দায়িত্বহীনতার নজির হিসেবে দেখেন।

ভুক্তভোগী সাংবাদিক আরও জানান, প্রেসক্লাবের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ভিড় এড়াতে একাই তিনি পরীক্ষাকক্ষে প্রবেশ করেন। তবে সেখানে গিয়ে তিনি দেখতে পান, অন্যান্য সাংবাদিক ছাড়াও বিএনসিসির সদস্য ও স্বেচ্ছাসেবকরা পরীক্ষাকক্ষে অবস্থান করছিলেন, যদিও তাঁদের দায়িত্ব হলের ভেতরে নয়।

তিনি বলেন, “স্বয়ং উপাচার্য স্যারের উপস্থিতিতে আমাকে প্রশ্নফাঁসের মতো গুরুতর অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছে—এটি আমার জন্য চরম অপমানজনক।”

এ সময় জনসংযোগ দপ্তরের পরিচালক ড. মুহাম্মদ আনওয়ারুস সালাম সাংবাদিককে উদ্দেশ করে বলেন, “তুমি যদি জার্নালিজম বিভাগের শিক্ষার্থী হতে, তাহলে এমন পরিস্থিতি হতো না। প্রফেশনালিজম বোঝা দরকার।”

এ বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম বলেন, “তাকে তাঁর কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। তা না হলে আমরা আমাদের মতো করে ব্যবস্থা নেব।"

google news সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

X