

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) তিনটি ভবন ও স্টেডিয়ামে চলমান রঙের কাজ সরাসরি একটি কোম্পানিকে দেওয়া হয়েছে—এ অভিযোগ তুলে কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন নিয়মিত ঠিকাদাররা।
রবিবার (৭ ডিসেম্বর) সকালে তারা ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে গিয়ে জোরপূর্বক কাজ থামিয়ে দেন। পরে প্রক্টরের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের দৃশ্য ধারণ করতে গেলে এক সাংবাদিকের ওপর চড়াও হন কয়েকজন ঠিকাদার।
হেনস্তার শিকার সাংবাদিক সোহাগ আলী তিনি চ্যানেল টোয়েন্টিফোর ও দৈনিক সোনার দেশের রাবি প্রতিনিধি। অভিযুক্তদের মধ্যে রানা নামের এক ঠিকাদারের নাম পাওয়া গেছে।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানায়, সমাবর্তনকে সামনে রেখে (প্রশাসন ভবন ১, প্রশাসন ভবন ২, সিনেট ভবন) ও স্টেডিয়ামের রঙের কাজ করছে বার্জার কোম্পানি। সাধারণত এই ধরনের কাজ বছরে যেসব ঠিকাদার নিয়মিত দায়িত্ব পালন করেন, তারাই কাজটি পান। কিন্তু এবার সময়সংকট ও কাজের মান নিশ্চিত করতে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিয়ে সংশ্লিষ্ট কমিটি চুক্তির মাধ্যমে বার্জারকে দায়িত্ব দেয়।
তবে অভ্যন্তরীণ ঠিকাদাররা দাবি করেন, সারা বছর তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ করেন, তাই এ কাজটিও তাদেরই দেওয়া উচিত ছিল। এ দাবিতে তারা বার্জারের কাজ বন্ধ করে দেন। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হলে প্রক্টর অধ্যাপক ড. মাহবুবর রহমান তাদের সঙ্গে দপ্তরে আলোচনা করেন। সেখানে কয়েকজন ঠিকাদার উচ্ছৃঙ্খল আচরণ শুরু করলে সাংবাদিক সোহাগ আলী ঘটনাটি ভিডিও করতে গেলে তাকে হেনস্তা করা হয় ও মোবাইল ফোন কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হয়।
ঘটনার পর রাবি প্রেসক্লাব, রাবি রিপোর্টার্স ইউনিটি ও রাবি সাংবাদিক সমিতি প্রক্টরের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়ে জড়িতদের শাস্তির দাবি জানায়।
প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমান বলেন, “আলোচনার সময় কিছু জুনিয়র কর্মী অশোভন মন্তব্য শুরু করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে আমি একজনের লাইসেন্স সম্পর্কে জানতে চাইলে আরও কয়েকজন উচ্চস্বরে কথা বলতে থাকে এবং পরিবেশ উত্তপ্ত করে তোলে। এরপর সাংবাদিকের মোবাইল কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা হয়—যা মোটেও কাম্য নয়। সহকারী প্রক্টররা দ্রুত তাকে নিরাপদে বের করে আনেন।”
তিনি আরও বলেন, “সাংবাদিকরা আমার কক্ষে আসবে—এটা তাদের অধিকার। পুরো ঘটনাটি দুঃখজনক ও অনভিপ্রেত।”
হেনস্তার শিকার সোহাগ আলী বলেন, “প্রক্টর দপ্তরের ভেতরেই কয়েকজন ঠিকাদার আমার ওপর চড়াও হয় এবং আমার ফোন কেড়ে নেয়। যদিও কয়েকজন তাদের থামানোর চেষ্টা করেছিল, তবুও বিষয়টি স্বাধীন সাংবাদিকতার জন্য হুমকির নামান্তর। আমি জড়িতদের শাস্তি দাবি করছি।”
রঙের কাজ আবার শুরু হবে কিনা জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক অধ্যাপক ড. আখতার হোসেন মজুমদার বলেন, “আগামীকাল থেকেই কাজ পুনরায় শুরু হবে। ১৭ ডিসেম্বর সমাবর্তন—কাজ শেষ করতেই হবে।”
সরাসরি কোম্পানিকে দায়িত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্তে প্রশাসনের কোনো ভুল হয়েছে কিনা—এ প্রশ্নে তিনি বলেন, “এ সিদ্ধান্ত সিন্ডিকেট অনুমোদিত। জরুরি কাজ হওয়ায় কোম্পানিকে দিয়ে করানো হচ্ছে। এটি টেন্ডার ছাড়া করার সুযোগ ছিল এবং আমরা সেই নিয়মেই এগিয়েছি।”
মন্তব্য করুন
