

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গীতে সম্পত্তির ভাগ নিয়ে বিরোধ ছিলো এক ভাই ও চারবোনের মধ্যে। তাই একমাত্র ছেলে আশ্রয় ও ভরণপোষণ না দেয়ায় বয়সের ভারে নুয়ে পড়া তসলিম উদ্দীন (৭০) থাকতেন মহিষমারী গ্রামের মেয়ে বিউটি আক্তারের বাড়িতে। বিউটি আক্তার তার দেখাশুনা এবং চিকিৎসা করাচ্ছিলেন।
রোববার সন্ধ্যায় সেখানেই বার্ধক্যজনিত কারণে মৃত্যু হয় তার। খবর পেয়ে আত্মীয়রা রাতেই মরদেহ নিয়ে পশ্চিম সরলিয়ার নিজ বাড়িতে দাফনের জন্য নিয়ে আসলে একমাত্র ছেলে মহসিন আলী বাবার মরদেহ বাড়ীতে ঢুকাতে দেয়নি। পরে মরদেহটি রাতভর রাখা হয় চাচার বাড়ীতে। আর অনুমতি না মেলায় কবর খুড়তে পারেনি আত্মীয়-স্বজনরা। তাই আটকে যায় দাফন কাজ।
সোমবার (১ ডিসেম্বর) বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার দু্ওসুও ইউনিয়নের পশ্চিম সরলিয়া গ্রামে এ ঘটনা। এরপর স্থানীয়দের উদ্যোগ ও পুলিশের পরামর্শে দীর্ঘ ২৩ ঘন্টা পর দাফন হয়েছে মরদেহ। অবসান হয়েছে ভুল বোঝাবুঝির। তবে সম্পত্তির কারণে বাবার মরদেহ একা ফেলে রাখা নিয়ে এলাকায় ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার তৈরি হয়েছে।
মৃত তসলিম উদ্দীন(৭০) ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার দু্ওসুও ইউনিয়নের পশ্চিম সরলিয়া গ্রামের বাসিন্দা।
সোমবার দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, তসলিম উদ্দীনের মরদেহটি মহসিন আলীর বাড়ীতে বারান্দায় খাটিয়ার উপর রয়েছে। একটি ফ্যানের বাতাস গায়ে দেওয়া হয়েছে। পাশে দুটি চেয়ার পড়ে আছে ফাঁকা। মরেদহর পাশে কোন আত্মীয়-স্বজনকে দেখা যায়নি। বাড়ীতে মরদেহ পড়ে থাকা নিয়ে কথা বলতে চেষ্টা করলেও কেউ কথা বলতে রাজি হননি।
স্থানীয়রা জানান, মেয়েদের নামে সম্পত্তি লেখে দেওয়ার কারণে তসলিম উদ্দীনের ছেলে মহসিন আলী, বাবার মৃত্যু স্বাভাবিক হয়নি অভিযোগ তুলে রবিবার রাতেই থানায় লিখিত অভিযোগ দেন। এরপরে মরদেহ দাফন নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়। স্থানীয়দের অনুরোধে মরদেহ নেয়া হয় ছেলের বাড়ীতে কিন্তু সে গ্রহন করেনি।
বালিয়াডাঙ্গী থানায় দেখা হয় ছেলে মহসিন আলীর সাথে। তিনি জানান, বাবা বোনের বাড়িতে মারা যাওয়ায় সন্দেহ হয়েছিল। এ কারণে থানায় অভিযোগ করেছি। সম্পত্তি নিয়ে বিরোধ আগের। এইখানে সম্পত্তির কোন বিষয় নয়। এখন আমরা সবাই আপোষ হয়ে গেছি।
এ বিষয় নিয়ে চার মেয়ের সাথে কথা বলার চেষ্টা করা হলেও তারা সকলেই শোকাহত। তাই কথা বলতে কেউ রাজি হয়নি।
দু্ওসুও ইউনিয়নের ইউপি সদস্য হবিবুর রহমান বলেন, মৃত্যুর পরপরই জমি ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে ছেলে লাশ আটকে রাখে। পরে দু’পক্ষকে নিয়ে বসে মীমাংসা করা হয়েছে। দুপুরের পর কবরস্থানে কবর খুড়ার অনুমতি দেয় মহসিন আলী। এরপরে বিকাল ৪টায় জানাযা নামাজ শেষে তার বাবার দাফন করা হয়।
বালিয়াডাঙ্গী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দুরুল হুদা বলেন, এটি সম্পূর্ণ পারিবারিক সমস্যা। গতরাতে ছেলে একটি অভিযোগ দিয়েছিল। আজ তারা কোনো অভিযোগ না থাকায় এবং মৃত্যুর বিষয়ে সন্দেহ দূর হওয়ায় ময়না তদন্ত ছাড়াই লাশ দাফনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে দাফন হয়েও গেছে।
মন্তব্য করুন
