

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


ভারতীয় হাইকমিশনের অনুরোধের প্রেক্ষিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় নিবিড় কূটনৈতিক যোগাযোগের মাধ্যমে অন্তঃসত্ত্বা নারী ও শিশুর পুশইনজনিত মানবিক ঝুঁকি এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে অমানবিক পুশইনের শিকার বহুল আলোচিত অন্তঃসত্ত্বা ভারতীয় নারী সোনালি খাতুনকে বিএসএফের নিকট হস্তান্তর করেছে বিজিবি।
শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৭টায় চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনামসজিদ আইসিপিতে আনুষ্ঠানিক পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে পুশইনের শিকার অন্তঃসত্ত্বা ভারতীয় নারী সোনালি খাতুন এবং তার ৮ বছরের সন্তান মো. সাব্বির শেখকে সুস্থ ও নিরাপদ অবস্থায় বিএসএফের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এ সময় মহানন্দা ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল গোলাম কিবরিয়া উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, গত ২৫ জুন ২০২৫ তারিখে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ কুড়িগ্রাম সীমান্ত দিয়ে ৬ জন ভারতীয় নাগরিককে জোরপূর্বক বাংলাদেশে পুশইন করে।
পুশইনের পর ওই ভারতীয় নাগরিকরা চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় প্রবেশ করলে স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে গ্রেপ্তার করে এবং ২২ আগস্ট ২০২৫ তারিখে আদালতের নির্দেশে জেলহাজতে প্রেরণ করে।
আটক ব্যক্তিদের মধ্যে ৩৫ সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বা ভারতীয় নারী সোনালি খাতুন ও তার এক নাবালক সন্তান ছিল।
মানবিক বিবেচনায় আদালত ২ ডিসেম্বর ২০২৫ তারিখে তাদের স্থানীয় জিম্মায় প্রদান করেন এবং ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনের অনুরোধে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও বিজিবির উদ্যোগে মানবিক দিক বিবেচনায় হস্তান্তরের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়।
হস্তান্তর শেষে মহানন্দা ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক সাংবাদিকদের বলেন, বিএসএফের এই অমানবিক পুশইন কর্মকাণ্ড আন্তর্জাতিক মানবাধিকার মানদণ্ড এবং দ্বিপাক্ষিক সীমান্ত ব্যবস্থাপনা চুক্তির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।
পুশইনের এই আচরণ দীর্ঘদিন ধরে সীমান্ত এলাকায় মানবিক সংকট সৃষ্টি করছে এবং উভয় দেশের সৌহার্দ্যপূর্ণ সীমান্ত ব্যবস্থাপনার পথে প্রতিবন্ধকতা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বিএসএফের অমানবিক আচরণের বিপরীতে বাংলাদেশ সরকার, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং বিজিবি মানবিক মূল্যবোধ, আন্তর্জাতিক আইন ও প্রতিবেশীসুলভ সম্পর্কের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা প্রদর্শন করে পুরো প্রক্রিয়াটি স্বচ্ছ, নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণভাবে সম্পন্ন করেছে। বিশেষ করে অন্তঃসত্ত্বা নারী ও শিশুর সুরক্ষা এবং চিকিৎসাগত ঝুঁকি বিবেচনায় বিজিবির এই উদ্যোগ ন্যায়, মানবতা ও দায়িত্বশীলতার অনন্য উদাহরণ স্থাপন করেছে।
বিজিবি আশা করে, পুশইনসহ এ ধরনের অমানবিক ও আন্তর্জাতিক আইনবিরোধী কার্যক্রম বিএসএফ ভবিষ্যতে বন্ধ করবে এবং সীমান্তে সৌহার্দ্যপূর্ণ, মানবিক ও আইনসম্মত প্রক্রিয়া বজায় রাখবে।
মন্তব্য করুন
