

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


মহান বিজয় দিবসেও অবহেলিত অবস্থায় পড়ে আছে কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার বীর সন্তান, স্বাধীনতা যুদ্ধের অন্যতম সংগঠক শহীদ আব্দুল হামিদের কবর।
স্থানীয় প্রশাসন, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ বা রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের পক্ষ থেকে মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) তাঁর সমাধিস্থলে শ্রদ্ধা জানাতে কেউ আসেনি। এই ঘটনাকে শহীদের আত্মত্যাগের প্রতি চরম অবমাননা হিসেবে দেখছেন স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা, পরিবারবর্গ এবং সাধারণ জনগণ।
শহীদ আবদুল হামিদ তৎকালীন কক্সবাজার মহকুমার বৃহত্তর চকরিয়া থানার মাতামুহুরী নদী বিধৌত কাকারা ইউনিয়নের বমু বিলছড়ি গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে ১৯৫০ সালের ৪ মার্চ জন্মগ্রহণ করেন।
আব্দুল হামিদ মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক থেকে হন শহীদ আব্দুল হামিদ, ১৯৭১ সালে চট্টগ্রাম কমার্স কলেজের তৎকালীন মেধাবী ছাত্র শহীদ আব্দুল হামিদ মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশ নিতে ভারত থেকে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। তিনি চকরিয়া অঞ্চলের প্রথম গেরিলা গ্রুপ গঠন করে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। নভেম্বরের শেষ দিকে শহীদ আব্দুল হামিদ পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের দোসরদের হাতে ধরা পড়েন। অমানুষিক নির্যাতনের পর আব্দুল হামিদকে টেকনাফ উপজেলা কমপ্লেক্সের পেছনের নাইটং পাহাড়ের বধ্যভূমিতে নিয়ে হত্যা করা হয়। বিজয়ের পর গলিত অবস্থায় তাঁর মরদেহ উদ্ধার করে পরিবার।
দীর্ঘদিনের অবহেলায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে স্থানীয়রা জানান, বছরের পর বছর জাতীয় দিবস এলেও এই বীর শহীদের কবরটি উপেক্ষিতই থেকে যাচ্ছে। পরিবার ও এলাকাবাসীর দাবি, সরকারিভাবে তাঁর অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ চকরিয়া পৌর বাস টার্মিনাল ও নিজ গ্রামে একটি বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হলেও, তাঁর সমাধিস্থল সংরক্ষণ ও যথাযথ মর্যাদা নিশ্চিত করতে আজ পর্যন্ত কোনো কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি।
শহীদ আব্দুল হামিদের এক স্বজন আক্ষেপ করে বলেন, আমরা প্রতি বছর এই দিনটির জন্য অপেক্ষা করি। আশা করি রাষ্ট্র এই মহান সন্তানকে সম্মান জানাবে। কিন্তু যখন দেখি কবরে একটি ফুলও পড়ে না, তখন বুকের ভেতরটা কষ্টে ভারি হয়ে যায়। এই অবহেলা মেনে নেওয়া কঠিন।
এ বিষয়ে চকরিয়া উপজেলা প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধারা জানান, অবিলম্বে শহীদ আব্দুল হামিদের কবরটি রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সংরক্ষণ করা হোক এবং জাতীয় দিবসগুলোতে যথাযথ সম্মান প্রদর্শন নিশ্চিত করা হোক। অন্যথায় নতুন প্রজন্মের কাছে মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস ও শহীদদের আত্মত্যাগের বার্তা পৌঁছানো সম্ভব হবে না।
মন্তব্য করুন
