

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার চাঁদপাশা ইউনিয়নের ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের অর্থায়নে নির্মিত বক্স কালভার্ট উদ্বোধনের আগেই ফাটল ধরেছে। নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার এবং তড়িঘড়ি করে কাজ শেষ করার কারণেই এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।
উপজেলার দক্ষিণ রফিয়াদি কালু মাঝির বাড়ির সামনে খালের মধ্যে নির্মাণ করা কালভার্ট (বক্স কালভার্ট) নির্মাণাধীন কাজ শেষ না হতেই এবং ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান কর্তৃক কালভার্ট ব্রিজটি হস্তান্তর করার আগেই কালভার্টটির বিভিন্ন স্থানে ফাটল ধরায় ধ্বংসের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
জানায়, দীর্ঘদিন ধরে উপজেলার দক্ষিণ রফিয়াদি গ্রামের বাসিন্দা সহ আশপাশের ৩/৪টি গ্রামের বাসিন্দারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে একটি ভাঙা লোহার পোল পারাপার করেই চলাচল করতে হতো। স্থানীয়দের দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের সেতু/কালভার্ট নির্মাণ প্রকল্পের মাধ্যমে দক্ষিণ রফিয়াদি কালু মাঝির বাড়ির সামনে খালের উপর ৯ দশমিক ১৫ মিটার সেতু/কালভার্ট নির্মাণের জন্য ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে ৩৩ লক্ষ ১৭ হাজার ৯৫০ টাকা ব্যয়ে একটি কালভার্ট নির্মাণের কাজ পান মেসার্স পি.এম. এর এন্টারপ্রাইজ।
স্থানীয়দের অভিযোগ—নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করায় দক্ষিণ রফিয়াদি কালু মাঝির বাড়ির সামনে খালের মধ্যে নির্মাণ করা কালভার্টটির বিভিন্ন স্থানে ফাটল দেখা দিয়েছে। শুধু তাই নয়, উদ্বোধনের আগেই কালভার্টের গাইড ওয়ালেও ফাটল দেখা দিয়েছে। বিষয়টি স্থানীয়রা জানাজানির পর হুড়োহুড়ি করে মাটি দিয়ে ফাটল ঢেকে দেওয়া হয়েছে বলে তাদের অভিযোগ।
নির্মাণাধীন ব্রিজ হস্তান্তরের আগেই ফাটল ধরায় চরম ক্ষোভ দেখা দিয়েছে এলাকাবাসীর মাঝে। স্থানীয় বাসিন্দা শাহীন বলেন, “নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে কালভার্ট ব্রিজটি নির্মাণ করা হয়েছে। কালভার্ট ব্রিজটি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর ও ব্রিজের কাজ এখনও সম্পূর্ণ শেষ হওয়ার আগেই ব্রিজটির দুই পাশের সাইড ওয়ালে ফাটল ধরেছে। ব্রিজ নির্মাণ করার সময় কাজের অনিয়ম ও নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করেছে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান।”
স্থানীয় কবির বলেন, “বক্স কালভার্ট নির্মাণ করার সময়ই নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করায় আমরা এলাকাবাসী এক হয়ে এর প্রতিবাদ করলে ঠিকাদার বিষয়টি দেখছে বলে বাবুগঞ্জ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাকে জানান। তারা ঘটনাস্থলে এসে পরিদর্শন করে যান। কিন্তু এরপরও ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নিয়েই তাদের অধিকাংশ বিল পেমেন্ট করে দিয়েছেন প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা।”
একটি সূত্রে জানা যায়, বাবুগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) সোহেল হোসেনের অনিয়মের কারণেই একের পর এক প্রকল্পের নির্মাণ কাজে ব্যাপক অনিয়মের ঘটনা ঘটছে। শুধু তাই নয়, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাকে অর্থ দিয়েই প্রকল্পের কাজগুলো নিতে হয় বলে অভিযোগ করেছেন একাধিক ব্যক্তি।
বাবুগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সোহেল হোসেনের মুঠোফোনে (১৪২) নম্বরে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোনটি রিসিভ করেননি।
বাবুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারুক আহমেদ বলেন, “কালভার্ট নির্মাণ কাজে কোনো অনিয়ম হলে তদন্ত করা হবে এবং তদন্ত করে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। পাশাপাশি কাজ হস্তান্তরের আগে ফাটল দেখা গেলে প্রয়োজনে সেটি ভেঙে নতুন করে নির্মাণ করা হবে।”
মন্তব্য করুন
