

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


খুলনায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) শ্রমিক শক্তির বিভাগীয় আহ্বায়ক মোতালেব শিকদার গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।
সোমবার (২২ ডিসেম্বর) বেলা পৌনে ১২টার দিকে নগরীর সোনাডাঙ্গা এলাকার সবুজবাগ–সার্জিক্যাল ক্লিনিক সংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে চিকিৎসকরা তার অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানান।
এনসিপি নেতাদের দাবি, দুটি মোটরসাইকেলে করে আসা দুর্বৃত্তরা মোতালেব শিকদারের মাথা লক্ষ্য করে গুলি চালিয়ে পালিয়ে যায়।
গুলিটি তার কানের পাশ দিয়ে বিদ্ধ হয়। ঘটনার সময় তিনি সোনাডাঙ্গা এলাকায় অবস্থান করছিলেন।
তবে পুলিশি তদন্তে উঠে এসেছে ভিন্ন তথ্য। জানা গেছে, মোতালেব শিকদারের মাথায় গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনাস্থল হিসেবে চিহ্নিত একটি বাসা থেকে মাদক সেবন ও নারী-সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন আলামত উদ্ধার করা হয়েছে।
বাসাটি চলতি বছরের নভেম্বর মাসে তন্নী নামের এক যুবতী ও অজ্ঞাতপরিচয় এক যুবক স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে ভাড়া নেন। ওই বাসায় মোতালেব শিকদারের নিয়মিত যাতায়াত ছিল বলে পুলিশ জানিয়েছে।
ঘটনার পরপরই বাসার ভাড়াটিয়া তন্নী ও তার কথিত স্বামী আত্মগোপনে চলে যান। যে কক্ষে গুলির ঘটনা ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে, সেখানে তল্লাশি চালিয়ে বিভিন্ন ধরনের মাদক সেবনের আলামত এবং একটি ব্যবহৃত গুলির খোসা উদ্ধার করা হয়েছে।
পুলিশের ধারণা, মাদক ও নারী-সংশ্লিষ্ট কর্মকাণ্ডকে কেন্দ্র করেই এ ঘটনা ঘটতে পারে।
মোতালেব শিকদার নগরীর সোনাডাঙ্গা শেখপাড়া পল্লী মঙ্গল স্কুল এলাকার বাসিন্দা।
তিনি মৃত মোসলেম শিকদারের ছেলে। এনসিপির যুগ্ম মুখ্য সংগঠক ডা. মাহমুদা মিতু বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, মোতালেব শিকদার এনসিপির খুলনা বিভাগীয় প্রধান ও শ্রমিক শক্তির কেন্দ্রীয় সংগঠক।
সোনাডাঙ্গা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) অনিমেষ মণ্ডল বলেন, মোতালেবকে মাথা লক্ষ্য করে গুলি করা হলেও তা কানের পাশ দিয়ে বেরিয়ে যায়।
প্রথমে তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে সিটি স্ক্যান করা সম্ভব না হওয়ায় অন্য একটি হাসপাতালে পরীক্ষা করিয়ে পুনরায় খুলনা মেডিকেলে ভর্তি করা হয়।
খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের (কেএমপি) ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) মো. তাজুল ইসলাম বলেন, ঘটনাস্থলের আশপাশে নারী ও মাদককেন্দ্রিক বিভিন্ন আলামত পাওয়া গেছে।
প্রাথমিকভাবে এটি অভ্যন্তরীণ কোন্দলের জেরে সংঘটিত হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে সোনাডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম জানান, ঘটনার তদন্ত চলমান রয়েছে। তদন্ত শেষে বিস্তারিত তথ্য জানানো হবে।
অন্যদিকে, ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে এনসিপির খুলনা জেলা ও মহানগর সংগঠক সাজিদুল ইসলাম বাপ্পি বলেন, খুলনা সন্ত্রাসীদের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে। নগরীতে নিয়মিত গোলাগুলি হচ্ছে, নদীতে লাশ পাওয়া যাচ্ছে।
প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তায় সাধারণ মানুষের জীবন ও নিরাপত্তা মারাত্মক ঝুঁকিতে পড়েছে। তিনি অভিযোগ করেন, রাজনৈতিক মদদে সন্ত্রাসী গ্রুপগুলো সক্রিয় রয়েছে এবং গ্রেপ্তারের পরও তারা সহজেই জামিনে মুক্ত হয়ে আবার অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে।
পুলিশ ও রাজনৈতিক দলের বক্তব্যে ভিন্নতা থাকায় ঘটনাটি ঘিরে নানা প্রশ্ন ও রহস্য তৈরি হয়েছে।
মন্তব্য করুন
