

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার নয়াপাড়া রেজিস্টার্ড রোহিঙ্গা ক্যাম্পে প্রতিদ্বন্দ্বী দুটি রোহিঙ্গা গ্রুপের মধ্যে রাতভর গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে।
এতে পুরো ক্যাম্প এলাকা যেন যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত হয়। মুহুর্মুহু গুলির শব্দে থমথমে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় ক্যাম্পজুড়ে, আতঙ্কে ঘরবন্দি হয়ে পড়েন হাজারো রোহিঙ্গা বাসিন্দা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রোববার (৮ নভেম্বর) গভীর রাত আনুমানিক ১১টার দিকে নয়াপাড়া রেজিস্টার্ড রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ভেতরে প্রতিদ্বন্দ্বী দুই সশস্ত্র গ্রুপের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে গোলাগুলি শুরু হয়।প্রায় এক ঘণ্টাব্যাপী চলা এই সংঘর্ষে দুই পক্ষ থেকে অন্তত ৩০ থেকে ৪০ রাউন্ড গুলি বিনিময় হয় বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।
একজন রোহিঙ্গা বাসিন্দা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, রাত ১১টার পর থেকে হঠাৎ গুলির শব্দে চারপাশ কেঁপে ওঠে। সবাই ভয়ে ঘর থেকে বের হতে পারেনি। শিশুরা কাঁদছিল, মনে হচ্ছিল ক্যাম্পে যেন যুদ্ধ লেগেছে।
ঘটনার খবর পেয়ে রাতেই টেকনাফ থানা পুলিশ ও ১৬ এপিবিএন সদস্যরা দ্রুত ক্যাম্পে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। ভোর পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টহল জোরদার ছিল এবং ক্যাম্পের প্রবেশপথে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
টেকনাফ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জায়েদ নুর জানান, নয়াপাড়া রেজিস্টার্ড ক্যাম্পে গোলাগুলির খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে অভিযান চালায়। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। অভিযুক্তদের শনাক্তে কাজ চলছে।
প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, ক্যাম্পের ভেতরে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী গ্রুপগুলোর অভ্যন্তরীণ বিরোধ ও আধিপত্য কায়েমের চেষ্টা থেকেই এ গোলাগুলির ঘটনা ঘটে।
গত কয়েক মাস ধরে নয়াপাড়া ক্যাম্পে একাধিকবার গোলাগুলি, অপহরণ ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয়দের দাবি, ক্যাম্পে দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন সশস্ত্র গ্রুপ সক্রিয় রয়েছে। তারা মাদক ও চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিয়মিত সংঘর্ষে জড়ায়। রোববার সকালেও ক্যাম্পজুড়ে ছিল উত্তেজনা ও ভয়ের পরিবেশ। সাধারণ রোহিঙ্গারা জানান, রাতে শিশু ও নারীসহ অনেকে পাশের ব্লকে আশ্রয় নেন।
একজন রোহিঙ্গা নেতা বলেন, আমরা শান্তিতে থাকতে চাই। কিন্তু কিছু সশস্ত্র গ্রুপের কারণে সবাই ভয়ে দিন কাটাচ্ছে। পুলিশ ও এপিবিএন টহল না বাড়ালে বড় ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে।
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে একের পর এক গোলাগুলির ঘটনায় নতুন করে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে টেকনাফে।স্থানীয়দের দাবি, সন্ত্রাসী গ্রুপগুলোর দৌরাত্ম্য রোধে নিয়মিত অভিযান না বাড়ালে যেকোনো সময় বড় ধরনের সহিংসতা ঘটতে পারে।
পুলিশ জানিয়েছে, পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযান অব্যাহত থাকবে।
মন্তব্য করুন