

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


আতশবাজি, আলোকসজ্জা আর উৎসবের আমেজে বিশ্বের নানা দেশে নতুন বছরকে স্বাগত জানানো হয়। কিন্তু কখনো কি ভেবে দেখেছেন— কেন জানুয়ারির ১ তারিখকেই বছরের প্রথম দিন হিসেবে ধরা হয়? এর পেছনে কি কোনো প্রাকৃতিক বা জ্যোতির্বিজ্ঞানসম্মত কারণ রয়েছে, নাকি এটি কেবলই মানুষের তৈরি একটি ঐতিহাসিক প্রথা?
ঐতিহাসিকদের মতে, খ্রিস্টপূর্ব যুগে রোমান ক্যালেন্ডারের বছর শুরু হতো মার্চ মাস দিয়ে। মার্চ ছিল যুদ্ধদেবতা ‘মার্স’-এর নামানুসারে নির্ধারিত একটি গুরুত্বপূর্ণ মাস। তবে রোমান সাম্রাজ্যের প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনার সুবিধার্থে ধীরে ধীরে জানুয়ারিকে সামনে আনা হয়।
এর বড় পরিবর্তন আসে খ্রিস্টপূর্ব ৪৬ সালে, যখন রোমান শাসক জুলিয়াস সিজার ক্যালেন্ডার সংস্কার করে চালু করেন “জুলিয়ান ক্যালেন্ডার”। তখনই জানুয়ারিকে বছরের প্রথম মাস হিসেবে ঘোষণা করা হয় এবং জানুয়ারির ১ তারিখকে অফিসিয়াল ‘নিউ ইয়ার’ বা নতুন বছরের প্রথম দিন হিসেবে নির্ধারণ করা হয়।
‘জানুয়ারি’ নামটির উৎসও রোমান পুরাণে। এটি এসেছে “জ্যানুস” নামক দেবতার নাম থেকে, যিনি ছিলেন দরজা, সূচনা ও বদলের প্রতীক। জ্যানুসকে দুই মুখবিশিষ্ট দেবতা হিসেবে চিত্রিত করা হতো—এক মুখ অতীতের দিকে, আরেক মুখ ভবিষ্যতের দিকে। অতীত ও ভবিষ্যতের এই প্রতীকী মিল থেকেই জানুয়ারিকে মনে করা হয় নতুন শুরুর উপযোগী মাস।
পরবর্তীতে ১৫৮২ সালে পোপ গ্রেগরি ত্রয়োদশ গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার প্রবর্তন করেন। এ ক্যালেন্ডারেও জানুয়ারির ১ তারিখ বছরের শুরু হিসেবেই বহাল থাকে। এরপর ধীরে ধীরে ইউরোপসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ এই তারিখকে স্বীকৃতি দেয় এবং বর্তমানে আন্তর্জাতিকভাবে এটিই সবচেয়ে স্বীকৃত নিউ ইয়ার ডে।
ধর্মীয়, ঐতিহাসিক এবং সভ্যতার বিবর্তনের ধারাবাহিকতায় আজও জানুয়ারির ১ তারিখ বিশ্বের মানুষের কাছে নতুন আশা, নতুন শুরুর প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে।
মন্তব্য করুন
