সোমবার
০৩ নভেম্বর ২০২৫, ১৯ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সোমবার
০৩ নভেম্বর ২০২৫, ১৯ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জুলাই সনদ বাস্তবায়নে বিলম্ব নয়, অবিলম্বে গণভোট চায় জাকসু

জাবি প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৩ নভেম্বর ২০২৫, ০৮:৪৯ এএম
ছবি: সংগৃহীত
expand
ছবি: সংগৃহীত

জুলাই সনদ বাস্তবায়নে টালবাহানা বন্ধ করে অবিলম্বে গণভোট আয়োজনের দাবি জানিয়েছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু)।

রোববার রাতে প্রকাশিত এক যৌথ বিবৃতিতে জাকসুর সহ-সভাপতি (ভিপি) আব্দুর রশিদ জিতু ও সাধারণ সম্পাদক (জিএস) মো. মাজহারুল ইসলাম এই দাবি জানান।

বিবৃতিতে উল্লেখ করেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থান দেশের জনমানুষের দীর্ঘদিনের রাষ্ট্র সংস্কারের স্বপ্ন পূরণের পথ খুলে দিয়েছে। কিন্তু বিএনপি ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাবিত মৌলিক সংস্কারগুলোর বাস্তবায়নে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। তারা অভিযোগ করেন, “বিএনপি রাষ্ট্রের ফ্যাসিবাদী কাঠামো টিকিয়ে রাখতে চায়, যা গণঅভ্যুত্থানের চেতনার সঙ্গে প্রতারণার শামিল।”

বিবৃতিতে বলা হয়, ঐকমত্য কমিশনের ৮৪টি ধারার মধ্যে মাত্র পাঁচটি ধারা আছে যেগুলোর বিপক্ষে কোনো দলের আপত্তি নেই। বাকি ধারাগুলোর বিরোধিতার মাধ্যমে কমিশনের দেড় বছরের আলোচনাকে অকার্যকর করে দেওয়া হচ্ছে।

নেতৃবৃন্দের মতে, এসব অবস্থান রাষ্ট্র সংস্কারের পথে বড় বাধা। তারা বলেন, “জনগণের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত গণঅভ্যুত্থানের ফল যেন হারিয়ে না যায়, সেই দায়িত্ব ছাত্র-জনতার।”

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, রাষ্ট্র সংস্কারের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার দেশের সার্বভৌম জনগণের, কোনো রাজনৈতিক দলের নয়।

তারা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, কোনো প্রকার দীর্ঘসূত্রিতা ছাড়া জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি দিতে অবিলম্বে গণভোটের আয়োজন করতে হবে। অন্যথায় ছাত্র-জনতা আবারও রাস্তায় নেমে অধিকার ছিনিয়ে আনবে।

জাকসুর বিবৃতিতে বিএনপির বিরোধিতার নির্দিষ্ট কয়েকটি উদাহরণ তুলে ধরেন তারা। সেগুলো হলো-

১. স্বৈরাচারী ও রাষ্ট্রদ্রোহী শেখ হাসিনার শাসনামলে বিচার বিভাগকে নির্বাহী বিভাগের অধীনে এনে নানা অপকর্মে ব্যবহার করা হয়েছিল। এই অবস্থা দূর করতে ঐকমত্য কমিশন প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে একটি স্বাধীন বিচার বিভাগীয় নিয়োগ কমিশন ও স্বতন্ত্র তদন্ত সার্ভিস গঠনের প্রস্তাব দেয়। কিন্তু বিএনপি উভয় প্রস্তাবেরই বিরোধিতা করেছে।

২। সরকারি চাকরিতে দুর্নীতি ও দলীয় নিয়োগ রোধে সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) সদস্য নিয়োগে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত নিরপেক্ষ ব্যবস্থা প্রস্তাব করা হলেও বিএনপি সেটির বিরোধিতা করেছে। এমনকি পিএসসিকে স্বাধীনভাবে বিধি প্রণয়নের ক্ষমতা দেওয়ার প্রস্তাবেও তারা আপত্তি জানিয়েছে।

৩। একই ব্যক্তি একসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় প্রধান থাকতে পারবেন না- যুগোপযোগী এই সংস্কার প্রস্তাবনারও বিরোধিতা করেছে বিএনপি। তত্তাবধায়ক সরকার ব্যবস্থায় র‍্যাংকড চয়েস প্রক্রিয়াতেও আপত্তি দলটির।

৪/ ভারসাম্য আনতে উচ্চকক্ষে পিআর পদ্ধতি চালুর বিষয়ে প্রায় সকল দল একমত পোষণ করলেও বিরোধিতা করেছে বিএনপি। প্রচলিত পদ্ধতিতে উচ্চকক্ষে আসন নির্ধারণ করা হলে উচ্চকক্ষ একটি অলংকার হিসেবে থাকবে মাত্র। এমনকি নির্বাচনের পূর্বেই উচ্চকক্ষের প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করার বিধানেও বিরোধিতা করছেন বিএনপি।

৫/ সংবিধানের ৭০ নং অনুচ্ছেদ, যেটির মাধ্যমে সংসদ সদস্যরা আইন প্রনয়নের ক্ষেত্রে দলীয় প্রধানের সিদ্ধান্তের বাহিরে মতামত দিলে তার সংসদ সদস্য পদ বাতিল হয়ে যায়, ঐকমত্য কমিশনের ৭০ নং অনুচ্ছেদ সংস্কারের প্রস্তাবে বিএনপি বিরোধিতা করে। এমনকি জাতীয় স্বার্থ ও নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট আন্তর্জাতিক চুক্তিসমূহ সম্পাদনের পর আইনসভার মাধ্যমে অনুমোদনের বিরুদ্ধেও বিএনপির অবস্থান।

google news সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন