

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


বাংলাদেশের তাঁত শিল্পের বর্তমান পরিস্থিতি দিন দিন আরও সংকটময় হয়ে উঠছে। অতীতে তাঁতীরা কটন ও পলেস্টার সূতা, রং এবং অন্যান্য রাসায়নিক দ্রব্যাদি আমদানি করে কম খরচে কাপড় উৎপাদন করতে পারতেন।
কিন্তু বর্তমানে এসব আমদানি সীমিত রাখায় উৎপাদন খরচ ব্যাপকভাবে বেড়ে গেছে।
গত ১৬ বছরে দেশের প্রায় ৬০% তাঁত বন্ধ হয়ে গেছে এবং প্রায় ১৫ লাখ তাঁতী ও তাঁত শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েছেন। তাঁতীরা জানাচ্ছেন, বর্তমানে ঋণ প্রকল্প থাকলেও অনেকেই ঋণ পাচ্ছেন না। এছাড়া কটন ও পলেস্টার সূতা, রং এবং রাসায়নিক দ্রব্যাদি আমদানিতে নানা জটিলতা থাকায় খোলা বাজারে তাদের দাম দ্বিগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।
একজন অভিজ্ঞ তাঁত ব্যবসায়ী সফি উদ্দিন সরকার বলেন, “যে কাপড় তৈরিতে আগে ৫০০ টাকা খরচ হতো, এখন সেটি তৈরিতে খরচ পড়ছে এক হাজার টাকা। এই অবস্থায় তাঁতীরা উৎপাদন চালিয়ে যাওয়ায় লোকসানই মুখোমুখি হচ্ছেন।”
তাঁত বোর্ডের প্রাথমিক সমিতি সংখ্যা ১৩৬০। তাঁতীরা আশা করছেন, এই সমিতিগুলোর মাধ্যমে আংশিক শুল্কমুক্ত কটন ও পলেস্টার সূতা, রং ও রাসায়নিক দ্রব্য আমদানির সুবিধা প্রদান করা হবে। এছাড়া অচল থাকা তাঁত সচল করা এবং পুঁজি সংকটে পড়া তাঁতীদের ঋণ বিতরণের ব্যবস্থা করার দাবি তাঁতীদের।
বাংলাদেশ তাঁত বোর্ডের ডিজিএম রতন চন্দ্র সাহা জানান, “সরকারি সুযোগ সুবিধা দেওয়া হয়, তবে সব তাঁতীদের তা দেওয়া সম্ভব হয় না। বর্তমানে শুল্কমুক্ত কটন ও পলেস্টার সূতা, রং ও রাসায়নিক দ্রব্য আমদানির অনুমতি স্থগিত আছে।”
চেয়ারম্যান আবু আহমদ সিদ্দিকী বলেন, “দুস্থ তাঁতীদের ঋণ সুবিধা চলমান আছে। তবে যারা ঋণ ফেরত দিতে পারবে না, তাদের আর ঋণ দেওয়া হয় না। আমদানির ক্ষেত্রে অতীতের দুর্নীতি তদন্তের কারণে বর্তমানে তা স্থগিত রয়েছে।”
জাতীয় তাঁতী সমিতির সভাপতি আব্দুস ছামাদ খান মনে করেন, “আংশিক শুল্কমুক্ত সূতা ও রাসায়নিক দ্রব্য আমদানি, পাশাপাশি পর্যাপ্ত ঋণ সুবিধা প্রদান করলে তাঁতশিল্পের উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পাবে। বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখতে এই পদক্ষেপ জরুরি।”
সূত্র জানায়, ৮ জুলাই ২০২৫ তারিখে জাতীয় তাঁতী সমিতি বস্ত্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেয়। ১৬ জুলাই ২০২৫ তারিখে মন্ত্রণালয় তাঁত বোর্ডকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেয়। কিন্তু কোথাও আমদানির অনুমতি স্থগিতের কথা উল্লেখ করা হয়নি।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, মনিটরিং কমিটি গঠন করলে দুর্নীতি বন্ধ হয়ে তাঁতীরা সুবিধা পেতে সক্ষম হবেন। কমিটিতে থাকবে বস্ত্রমন্ত্রণালয়, জাতীয় তাঁতী সমিতি ও তাঁত বোর্ডের কর্মকর্তারা।
 সর্বশেষ খবর পেতে  Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
    
    
    সর্বশেষ খবর পেতে  Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
    
মন্তব্য করুন
