

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


কিশোরগঞ্জ শহরের নরসুন্দা নদীর তীরে অবস্থিত ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের ১৩টি দানসিন্দুক থেকে এবার পাওয়া গেছে ১১ কোটি ৭৮ লাখ ৪৮ হাজার ৫৩৮ টাকা।
শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) সকাল ৭টায় দানসিন্দুক খোলার পর শুরু হওয়া দীর্ঘ গণনা কার্যক্রম শেষ হয় রাত ৮টার দিকে। গণনা শেষে পুরো অর্থ রূপালী ব্যাংকের হিসাবে জমা করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসক ও পাগলা মসজিদ কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ আসলাম মোল্লা সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মসজিদ কর্তৃপক্ষ জানায়, সাধারণত তিন থেকে চার মাস পরপর দানসিন্দুক খোলা হলেও এবার ৩ মাস ২৭ দিন পর দানসিন্দুক খোলা হয়। সময় তুলনামূলক কম হলেও এবারও পাওয়া গেছে রেকর্ড পরিমাণ দান। ১৩টি লোহার সিন্দুক থেকে মোট ৩৫ বস্তা টাকা, বিপুল পরিমাণ স্বর্ণালংকার ও বৈদেশিক মুদ্রা উদ্ধার করা হয়েছে।
এর আগে চলতি বছরের ৩০ আগস্ট পাগলা মসজিদের ১৩টি দানসিন্দুক খুলে পাওয়া গিয়েছিল ১২ কোটি ৯ লাখ ৩৭ হাজার ২২০ টাকা। প্রতিবারই দানের অংক নতুন করে রেকর্ড সৃষ্টি করছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
শনিবার সকালে সিন্দুক খোলার পর প্রথমে লোহার সিন্দুকগুলো থেকে টাকা বস্তায় ভরা হয়। পরে মসজিদের দ্বিতীয় তলার মেঝেতে ঢেলে শুরু হয় টাকার গণনা। এই কাজে অংশ নেন পাগলা মসজিদ কমপ্লেক্সের নূরুল কোরআন হাফিজিয়া মাদরাসা ও আল জামিয়াতুল ইমদাদিয়া মাদরাসার ৩৬০ জন শিক্ষার্থী, ৩৩ জন শিক্ষক ও স্টাফ, রূপালী ব্যাংকের ১০০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ মোট প্রায় ৫০০ জন।
গণনার পুরো সময়জুড়ে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। প্রশাসনের পাশাপাশি সেনাবাহিনী, পুলিশ ও আনসার সদস্যরা উপস্থিত থেকে সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করেন।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আসলাম মোল্লা ও পুলিশ সুপার ড. এস এম ফরহাদ হোসেন-এর নেতৃত্বে সকাল ৭টায় আনুষ্ঠানিকভাবে দানসিন্দুক খোলা হয়। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. কামরুল হাসান মারুফ, ১৮ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, রূপালী ব্যাংকের সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) মোহাম্মদ আলী হারেসী, মসজিদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও পাগলা মসজিদ কমিটির অন্যান্য সদস্যরা।
কিশোরগঞ্জ শহরের পশ্চিমাঞ্চলের হারুয়া এলাকায় নরসুন্দা নদীর তীরে অবস্থিত পাগলা মসজিদ জেলা শহরের অন্যতম ঐতিহাসিক ও ধর্মীয় স্থাপনা। জনশ্রুতি রয়েছে, সহিহ নিয়তে এ মসজিদে দান করলে মানুষের মনের আশা পূরণ হয়। এই বিশ্বাসকে কেন্দ্র করেই দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে প্রতিদিন অসংখ্য ধর্মপ্রাণ মানুষ এখানে এসে দান করে থাকেন।
মসজিদে মানুষ শুধু টাকা-পয়সাই নয়, স্বর্ণালংকার, গবাদিপশু, হাঁস-মুরগি ও বিভিন্ন মূল্যবান সামগ্রীও দান করে থাকেন। এসব দানের অর্থ ও সম্পদ মসজিদের উন্নয়ন, এতিম ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ব্যয় নির্বাহসহ বিভিন্ন ধর্মীয় ও সামাজিক কাজে ব্যয় করা হয়।
জেলা প্রশাসক জানান, বর্তমানে পাগলা মসজিদের ব্যাংক হিসাবে জমা রয়েছে প্রায় ১০৪ কোটি টাকা। এ ছাড়া অনলাইনে দানের মাধ্যমে জমা হয়েছে ১২ লাখ ৮৯ হাজার ৯৪৩ টাকা।
মন্তব্য করুন
