বুধবার
১৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ২ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বুধবার
১৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ২ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মানিকগঞ্জে ট্রাফিক পুলিশের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ

মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০২ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৬:১৩ পিএম
রিকশার নাম্বার প্লেট
expand
রিকশার নাম্বার প্লেট

মানিকগঞ্জে ট্রাফিক পুলিশ জাসেল এর বিরুদ্ধে রিকশার নাম্বার প্লেট বাবদ টাকা নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

সোমবার (১ ডিসেম্বর) বিকেলে শহরের খালপাড় এলাকায় এক রিকশাচালকের সাথে কথা হলে এমন তথ্যের সন্ধান পাওয়া যায়। পরে পরের দিন মঙ্গলবার অনুসন্ধান চালায় এনপিবি নিউজ এর এই প্রতিবেদক।

জানা যায়, এক রিকশাওয়ালাকে রিকশার নাম্বার প্লেট বাবদ মাসে ১৫০০ টাকা করে ভাড়া দিতে হয় ওই ট্রাফিক পুলিশকে। শুধু তাই নয়, রিকশা যাতে ট্রাফিক পুলিশ আটক না করে, সেজন্য জাসেলের পরিবারের শিশুদের নিয়মিত স্কুলে পৌঁছে দিতে হয় চালকের। তবে এর জন্য নির্দিষ্ট কোন পারিশ্রমিক পায়না সেই রিকশাওয়ালা, যদি খুশি হয়ে কিছু দেন তাই পকেটে রেখে দেন। বিনিময়ে তার অবৈধ রিকশা পুলিশ থামালে তা ছাড়িয়ে দেওয়ার দায়িত্ব থাকে জাসেলের উপর।

অথচ, সাধারণ চালকদের গাড়ি ডাম্পিং এ দিলে তাদের গুনতে হয় ১৫০০ থেকে ২০০০ টাকা পর্যন্ত। আবার দুই দিন আটক থাকে গাড়িটি। এতে নিম্ন আয়ের এই মানুষদের পড়তে হয় আর্থিক সংকটে। তাদের সাথে হওয়া এমন অনিয়মের সমাধান চেয়েছেন তারা।

এই ট্রাফিক পুলিশের বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ তিনি ট্রাফিক পুলিশের পাশাপাশি ১০ এর অধিক হ্যালো বাইকের মালিক ছিলেন‌, যা সরকারি চাকরির বিধিমালা অমান্য। পরবর্তীতে বিষয়টি পুলিশ সুপার জানলে তৎক্ষণাৎ সবগুলো হ্যালো বাইক বিক্রি করে দেন তিনি। তবে থেমে নেই তার এই লাইসেন্স বাণিজ্য। নানা কৌশলে চলছে তার এই রমরমা বাণিজ্য।

পৌরসভার নাম্বার প্লেট অনুযায়ী ১১৯ নম্বর রিকশাটি চালাচ্ছেন মোঃ রবিন। তার কাছে তথ্য জানতে চাইলে তিনি শুধু বলেন, আমি পুথুল মিয়ার কাছ থেকে প্লেট নিয়েছি তার বিনিময়ে আমাকে মাসে ১৫০০ টাকা করে দিতে হয় তাকে।

কে এই পুথুল মিয়া? তাকে খুঁজতেই বেরিয়ে আসে বাড়ি তার নেত্রকোনা হলেও মানিকগঞ্জে তিনি রিকশা চালকের কাজ এবং এবং ট্রাফিক পুলিশ জাসেলের বাসায় কেয়ার টেকার হিসেবে কাজ করেন। জাসেলের বাজার করা থেকে শুরু করে সন্তানদের স্কুলে নেওয়া এবং দেওয়া সব কিছুই করেন তিনি । পুথুল মিয়া বলেন, জাসেল স্যার আমাকে নাম্বার প্লেট ম্যানেজ করে দিয়েছে কিন্তু ব্লু বুক আমি পাই নাই । তার কাছে চাইছিলাম সে বলে আমার ম্যানেজ করে দিতে হবে। আমি আমার গাড়ি বিক্রি করে দিয়েছি তবে গাড়িতে থাকা সেই লাইসেন্স আরেকজনকে দিয়েছি সে মাসে ১৫০০ করে টাকা দেয়, সেই টাকা আমি জাসেল স্যারকে দেই। ‎ ‎কত টাকা বেতনে ট্রাফিক পুলিশ জাসেলের জন্য কাজ করেন এমন প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, আমি কোন টাকা নেই না, কিন্তু বিনিময়ে আমার গাড়ি কোন পুলিশ ধরলে জাসেল স্যার ছাড়িয়ে দেয়। ‎ ‎অভিযোগের বিষয়ে ট্রাফিক পুলিশ (সার্জেন্ট) জাসেল কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।

গোপনে ধারণকৃত এক ভিডিওতে ট্রাফিক ইন্সপেক্টর (প্রশাসন) মোহাম্মদ আব্দুল হামিদ খান বলেন, আমি জয়েন করার পর সত্যি বলতে উনার আগে কয়েকটি গাড়ি ছিল।

এক সাংবাদিক এই নিয়ে কথা বললে পরবর্তীতে তাকে আমি বলি গাড়িগুলো বিক্রি করে দেবার জন্য। এবং আমার জানামতে সে গাড়িগুলো বিক্রি করে দিয়েছিল। তবে এ বিষয়ে তিনি আনুষ্ঠানিক বক্তব্য দিতে রাজি হননি।ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলার পরামর্শ দেন তিনি।

এ বিষয়ে জেলার নবনিযুক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সারওয়ার আলম বলেন, এমন টাকা নেওয়ার কোন সুযোগ নেই। নিউজের সত্যতা পেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

google news সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

X