বুধবার
১৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ২ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বুধবার
১৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ২ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

উদার গণতন্ত্র স্থান না পেলে উগ্রবাদ জন্ম নেয়

এনপিবি ডেস্ক
প্রকাশ : ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৪:৩২ পিএম
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
expand
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্ন ও বর্তমান বাস্তবতার ফারাক নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। একটি সংবাদপত্রকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, স্বাধীনতার সময় যে গণতান্ত্রিক ও শোষণহীন সমাজের প্রত্যাশা ছিল, তা পূরণ হয়নি। তাঁর মতে, গত ৫৪ বছরে দেশে গণতন্ত্র প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পায়নি। ফলে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা, হত্যা এবং গণঅভ্যুত্থান দেখা গেছে। সাম্প্রতিক উগ্রবাদের উত্থানকে তিনি মানুষের স্বল্প সময়ের ক্ষোভ বলে মনে করেন। তাঁর মতে, দেশে উদার গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা রাখতে হবে।

প্রশ্ন: বিজয়ের ৫৪ বছরে পৌঁছে আপনার ব্যক্তিগত অনুভূতি জানতে চাই।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর: দেশ স্বাধীন হওয়ার প্রায় ৫৪ বছর হল। এবার আমরা ৫৪ বছরের বিজয় দিবস পালন করছি। খুব আনন্দের সঙ্গে বলতে পারছি না যে অনুভূতিটা আমার সুখকর। এই অনুভূতি ভালো-মন্দ, দুঃখ-বেদনা মিলিয়ে। এ জন্য যে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় আমাদের যে স্বপ্ন ছিল, যে প্রত্যাশা ছিল, সত্যিকার অর্থেই একটা স্বাধীন সার্বভৌম, একটা গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ দেখব এবং একটা গণতন্ত্রের চর্চা হবে এখানে, গণতন্ত্রের সংস্কৃতি চলমান থাকবে, প্রাতিষ্ঠানিক রূপ লাভ করবে এবং ওই চর্চার ওপর দিয়ে আমরা এখানে গণতন্ত্রকে বিকশিত করতে সক্ষম হব; সেভাবে একটা সমাজ গড়ে উঠবে, রাষ্ট্র সেভাবে গড়ে উঠবে। তবে আমরা যে গণতন্ত্র বুঝি, সেই গণতন্ত্র এখানে হয়নি। ফলে আমরা দেখেছি এই ৫৪ বছরে অনেক গণঅভ্যুত্থান হয়েছে, অনেক চড়াই-উতরাই গেছে, অনেক নেতাকে হত্যা করা হয়েছে।

সামগ্রিকভাবে এটা বলা যেতে পারে, রাজনৈতিকভাবে আমরা এখানে খুব একটা স্থিতিশীল অবস্থার মধ্যে নেই। অর্থনীতির চাকাও শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান যেভাবে সচল করেছিলেন, যে সংস্কার শুরু করেছিলেন, সেটা পরবর্তী সময়ে আর হয়নি। পরে দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার সময়ে আমরা নতুনভাবে মুক্তবাজার অর্থনীতি চালু করে যে অর্জনটা করেছিলাম, সেটাকেও ধ্বংস করেছে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ। শেখ হাসিনা সরকার সেটাকে ধ্বংস করে দিয়ে একটা অলিগার্কি প্রতিষ্ঠা করেছে। এ বিষয়গুলো কখনোই আমাদের জন্য সুসংবাদ বয়ে আনেনি। সেখানেই আমার আপত্তি, আমার কষ্ট, সেই জায়গায় আমার দুঃখ হয় যে আমাদের সম্ভাবনা ছিল। কারণ ইতোমধ্যে আমরা কিছু কিছু অর্জন করেছি; যে অর্জনগুলো আমাদের জন্য অত্যন্ত ইতিবাচক। সেটাকে যদি আমরা কাজে লাগাতে পারতাম, রাজনৈতিক কাঠামো সেভাবে নির্মাণ করতে পারতাম তাহলে আমাদের অর্থনীতি এখন যা আছে তার চেয়ে আরও বেশি এগিয়ে যেতে পারত। এখন তো আমরা একটা বিপদের মধ্যেই আছি। কারণ গণঅভ্যুত্থানের পরে অর্থনীতি যেখানে নেমে গেছে, তাতে স্বাভাবিকভাবেই একটা সমস্যা তৈরি হয়েছে। আর রাজনৈতিক ও গণতন্ত্রের উত্তরণের যে যাত্রা শুরু হয়েছে, সেই যাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। যে ঘটনাগুলো ঘটছে বিশেষ করে হাদির ওপরে যে আক্রমণ, এটা আমাদের যথেষ্ট নাড়া দিয়েছে। এ জন্যই আমার মন খারাপ থাকে মাঝে মাঝে। কিন্তু তারপরও তো আমরা এগিয়ে যাব। আমাদের সামনে যেতেই হবে। এর কোনো বিকল্প নেই।

প্রশ্ন: মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপট তৈরিতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় কোনগুলো এবং কেন?

মির্জা ফখরুল: মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপট তৈরি হয়েছিল বিভিন্ন কারণে। একটা হচ্ছে ১৯৪৭ সালে যখন এ অঞ্চলের মুসলিমদের অর্থাৎ জাতিগতভাবে, অর্থনৈতিকভাবে বিশাল ফ্যাক্টর ছিল। সেভাবেই ১৯৪৭-এ দেশভাগ হয়েছে। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান এবং পশ্চিম পাকিস্তান মিলে একটা দেশ হয়েছে। কিন্তু পরবর্তীকালে যে ফ্যাক্টর বড় কাজ করেছে, পশ্চিম পাকিস্তান অর্থাৎ পাকিস্তানের নেতাদের পূর্ব পাকিস্তানের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ– এগুলো আমাদের এখানে ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়ায়। এই বৈষম্য একদিকে রাজনৈতিকভাবে হয়েছে, অন্যদিকে অর্থনৈতিকভাবেও হয়েছে। এ কারণে মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপট এ দেশের মুক্তিকামী মানুষের সামনে এসেছে। মূলত ভাষা আন্দোলন দিয়েই এর সূত্রপাত হয়েছে। পাকিস্তানের কায়েদে আজম মোহাম্মদ আলি জিন্নাহ যখন ঘোষণা করলেন– উর্দুই হবে এ দেশের রাষ্ট্রভাষা; সেখান থেকেই বিভাজন শুরু। এ অঞ্চলের যারা পূর্ব পাকিস্তানি ছিলাম, সে সময় আমরা মনে করতে শুরু করেছি যে আমাদের ওপরে বঞ্চনা হচ্ছে, আমাদের যেটা পাওয়া দরকার তা আমরা পাচ্ছি না, অধিকার হরণ করা হচ্ছে। এসব বিষয় যখন সামনে এসেছে তখনই আমাদের এই মুক্তিযুদ্ধের পটভূমি তৈরি হয়েছে।

এর বাইরে আমি বাম রাজনীতি– মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর সঙ্গে কাজ করেছি। মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী বারবার বাংলাদেশের, তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের অধিকারের জন্য কথা বলেছেন, আন্দোলন করেছেন। সেগুলো হয়েছে। শেখ মুজিবুর রহমান ওই সময় ছয় দফা দিয়েছেন। এই ছয় দফার মধ্যে বাঙালি জাতীয়তাবাদের একটা বিষয় ছিল। ওই সময় এটা আমাদের বাস্তবতা, ওটাই এ অঞ্চলের মানুষ গ্রহণ করেছে। ফলে ছয় দফা আন্দোলন ওইভাবে এগিয়ে গেছে। এতে ১৯৭০ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ জনমত পেয়েছে। এখানে মূল বিষয়, একটা স্বাধিকারের ব্যাপার ছিল এবং পূর্ব পাকিস্তান স্বাধীন করার ব্যাপারে আমরা ছাত্র ইউনিয়ন থেকে কথা বলেছি। আমরা পূর্ব বাংলার স্বাধীনতার কথা বলেছি। সব মিলিয়ে এ অঞ্চলের মানুষ পাকিস্তান থেকে আলাদা হতে চেয়েছিল এবং একই সঙ্গে তারা একটি স্বাধীন রাষ্ট্র চেয়েছে।

প্রশ্ন: ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের পারস্পরিক সম্পর্ক নিয়ে বললেন। সংযোগটা কোথায়?

মির্জা ফখরুল: সংযোগ তো আছে। বাংলা হচ্ছে আমার জাতির মুখের ভাষা, মায়ের ভাষা। এই জায়গাটাতে বাধা এসেছে, রক্তপাত হয়েছে। তখন স্বাভাবিকভাবে এ দেশের মানুষ মনে করেছে যে আমার ভাষায় আমি কথা বলব, সেটাও বাধগ্রস্ত করে এরা গুলি করে আমার সন্তানকে মেরেছে! এখান থেকে পাকিস্তান রাষ্ট্রের প্রতি একটি নেতিবাচক অবস্থা তৈরি হয় মানুষের মধ্যে। তখন আর একই ধর্ম কিংবা জাতীয়তাবাদ আদর্শের বন্ধন থাকেনি। আবার ৭৩ বছর আগে এই ভাষা আন্দোলনের চেতনা ছিল আমাদের স্বাধিকারের চেতনা, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থার চেতনা, চেতনা ছিল মুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠায় আমরা সবাই কথা বলতে পারব, আমরা আমাদের স্বাধীন চিন্তাগুলো প্রকাশ করতে পারব, বাকস্বাধীনতা থাকবে এবং সংবাদপত্রের স্বাধীনতা থাকবে; সবচেয়ে বড় যে বিষয়টি ছিল, এই বাংলাদেশে মানুষের স্বাধীনতা থাকবে। ভাষা আন্দোলনের সেই চেতনাকে ধারণ করে ১৯৭১ সালে আমরা স্বাধীনতা যুদ্ধ করেছি।

মাতৃভাষার জন্য জীবন উৎসর্গ করে আত্মত্যাগের যে মহিমান্বিত দৃষ্টান্ত স্থাপন হয়, পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামে তা আমাদের অনুপ্রাণিত করেছে। ’৭১ সালের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত স্বাধীনতার প্রথম ভিত্তি স্থাপিত হয়েছিল ’৫২-এর ভাষা আন্দোলনে। ভাষা আন্দোলন কেবল একটি ভাষার অধিকারের সংগ্রাম ছিল না, বরং তা এ জাতির আত্মপরিচয় ও স্বাধীনতা আন্দোলনের ভিত্তি স্থাপন করে।

প্রশ্ন: চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের পর মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস নিয়ে বিতর্ক, স্থাপত্য-ভাস্কর্য ভাঙা, নেতাদের নিয়ে কটূক্তি ইত্যাদি অহরহ দেখা যাচ্ছে। এই প্রবণতা কি সমাজে উগ্রবাদ বা সাম্প্রদায়িকভাবে প্রশ্রয় দেওয়ার শামিল? এ ক্ষেত্রে সরকারের ভূমিকাকে আপনি কীভাবে দেখেন?

মির্জা ফখরুল: ১৫ বছরে আওয়ামী লীগের যে দুঃশাসন, পরিকল্পিতভাবে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করা, গণতান্ত্রিক অধিকার নষ্ট করা এবং রাজনৈতিক কার্যক্রম ব্যাহত করা, লাখ লাখ মানুষের নামে মিথ্যা মামলা দেওয়া, হাজার হাজার মানুষকে হত্যা করা, হাজার হাজার মানুষকে কারাগারে নিক্ষেপ করা এবং সর্বোপরি দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় কারাগারে নিক্ষেপ করা– এসব মিলিয়ে মানুষের মধ্যে যে পুঞ্জীভূত ক্ষোভ তৈরি হয়েছিল, সেটারই বহিঃপ্রকাশ ঘটছে এখন। জুলাই যুদ্ধ অর্থাৎ বঞ্চনার বিরুদ্ধে, বৈষম্যের বিরুদ্ধে এবং গণতান্ত্রিক অধিকার না পাওয়ার বিরুদ্ধে এটা ছিল স্বাভাবিক। অন্যদিকে নতুন প্রজন্মের মধ্যে হত্যাশা, বেকারত্ব, বৈষম্যমূলক আচরণ, তাদের চিন্তা-চেতনার অধিকার খর্ব করা, চরম মাত্রায় বেকারত্ব– এসব মিলিয়ে এমন একটা ক্ষোভ তৈরি হয়েছিল যে সেই ক্ষোভে তখন সবকিছু ভেঙে যাচ্ছিল।

এর ফলে ব্যক্তি বন্দনার ভাস্কর্য আর থাকেনি। এটাই হচ্ছে বাস্তবতা। এর মধ্য দিয়ে উগ্রবাদ কিছুটা বেড়েছে। এ ব্যাপার কোনো সন্দেহ নেই। এই উগ্রবাদের জন্য দায়ী শেখ হাসিনা। আমরা তখন বারবার বলেছি, আপনি উদার গণতন্ত্র স্থান না দিলে উগ্রবাদের জন্ম হবে। সেটাই আজকে কিছুটা হলেও হয়েছে। তার নজির আমরা দেখছি। আমি মনে করি, এটা স্বল্প সময়ে মানুষের ক্ষোভ থেকে হয়েছে। এটাও চলে যাবে। এখানে উদার গণতন্ত্র ছাড়া উপায় নেই। আমাদের মতো দেশে, রাষ্ট্রে উদার গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে রাখতে হবে। এখানে উগ্রবাদের কোনো স্থান হবে না।

প্রশ্ন: ক্রমাগত মিথ্যা ও বিকৃতির মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের রক্তাক্ত অধ্যায় ও ইতিহাসের অবিকৃত পাঠে নতুন প্রজন্মের সামনে উপস্থাপনের জন্য কোনো পরিকল্পনা আছে?

মির্জা ফখরুল: ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ছিল গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র, মুক্ত, শোষণহীন, অসাম্প্রদায়িক সমাজের। কিন্তু স্বাধীনতার পরে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় বসে সেই পথে না গিয়ে বিভাজনের পথ তৈরি করল। আওয়ামী লীগ বলতে শুরু করল, এক নেতার এক দেশ। এতে জাতি বিভক্ত হয়ে গেল। এই দলটির হাত ধরেই ইতিহাস বিকৃতির শুরুটা হয়েছিল। ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা আমলে ইতিহাস বিকৃতি চরম পর্যায়ে পৌঁছে যায়। সেখানে নতুন করে ইতিহাস রচনা করে আওয়ামী লীগ নতুন বয়ান সৃষ্টি করে বলেছে– স্বাধীনতার ঘোষণা করেছেন শেখ মুজিবুর রহমান, আওয়ামী লীগই হচ্ছে একমাত্র দল, তারাই শুধু যুদ্ধ করেছে, আর কারও কিছু অবদান ছিল না এখানে।

আপনার মনে আছে নিশ্চয়ই, ১৯৭৫ সালে পট পরিবর্তনের পরে জিয়াউর রহমানই কিন্তু মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কেন্দ্রীয় দপ্তর প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৭৭ সালে শহীদ জিয়া বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় পুরস্কার স্বাধীনতা পদক প্রবর্তন করেন। বিভিন্ন ক্ষেত্রে অনন্যসাধারণ অবদানের জন্য বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে এ সম্মাননা পুরস্কার দেওয়া হয়। রাষ্ট্রভাষা প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে ভাষাশহীদদের প্রতি সম্মান জানিয়ে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য জিয়াউর রহমান ‘একুশে পদক’ নামে আরেকটি পুরস্কার প্রবর্তন করেন। এটি রাষ্ট্রীয় দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সম্মাননা। ১৯৭১ সালের রাজনৈতিক চেতনাকে সামাজিক ও সাংস্কৃতিক শক্তিতে রূপান্তরের কাজ জিয়াউর রহমানের হাত ধরেই শুরু হয়েছিল। জিয়াউর রহমানের শাসনামল সামাজিক ও অর্থনৈতিক রূপান্তরের এক উল্লেখযোগ্য উদাহরণ। রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও সামাজিক জীবনের মেলবন্ধন একটি দেশের পরিচয় গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

এখানে আমি মনে করি, এর ওপরে শুধু বইপত্র লিখলে হবে না, সঙ্গে সঙ্গে চেতনাটাকে সেই জায়গায় নিয়ে আসতে হবে। সে জন্য সঠিক ও অবিকৃত ইতিহাস খুব জরুরি। বিএনপি সরকারে গেলে অবশ্যই এই জায়গাগুলো গভীরভাবে চিন্তা করবে এবং অবিকৃত ইতিহাস যেন ভবিষ্যৎ প্রজন্মের সামনে আসে সে কাজটা আমরা করব।

প্রশ্ন: লাখ লাখ মানুষের আত্মত্যাগ ও বীরত্বে পাওয়া স্বাধীন বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধারা তাদের প্রাপ্ত সম্মান কীভাবে পেতে পারেন বলে আপনি মনে করেন?

মির্জা ফখরুল: দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য যে স্বাধীনতার পর থেকে বিভিন্ন সরকারের সময় মুক্তিযোদ্ধাদের কাঙ্ক্ষিত মর্যাদায় অধিষ্ঠিত করা সম্ভব হয়নি। বিএনপি জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান মুক্তিযোদ্ধাদের যথাযথ সম্মান ও মর্যাদায় অধিষ্ঠিত করবে। মূলত আমি মনে করি, মুক্তিযোদ্ধারা তাদের সম্মান সবচেয়ে বেশি পেতে পারেন যখন একটা গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ নির্মাণ সম্ভব হবে, যখন অর্থনৈতিক দিক দিয়ে স্বাবলম্বী একটা বাংলাদেশ নির্মাণ হবে এবং সত্যিকার অর্থেই এখানে মানুষের সাম্য ও মানবিক মর্যাদাকে সবচেয়ে প্রাধান্য দিয়ে একটা রাষ্ট্র নির্মাণ করা গেলে তারা যথার্থ সম্মান পেতে পারেন।

সূত্র: সমকাল।

google news সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

X