

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


ঠাকুরগাঁও রাণীশংকৈল উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি ও নৌকা প্রতিকে নির্বাচিত সাবেক মেয়র আলমগীর সরকারকে গত সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) রাতে পৌর শহরের ভান্ডারা তার বাড়ী এলাকা থেকে আটক করে পুলিশ।
আটকের পর ওই রাতেই কেন্দ্রীয় ছাত্র অধিকার পরিষদের সহ-সভাপতি ও গণঅধিকার পরিষদ মনোনীত ঠাকুরগাঁও-৩ আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী মামুনুর রশিদ মামুন থানায় সাবেক মেয়র আলমগীর সরকারের স্ত্রী ও গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদকে সাথে নিয়ে থানায় যান ।
সেখানে সে সময় সহকারী পুলিশ সুপার (রাণীশংকৈল সার্কেল) স্নেহাশীস কুমার দাস ও রাণীশংকৈল থানার ওসি আমানুল্লাহ বারী সাথে কথা বলেন, কি অভিযোগে কোন মামলায় তাকে আটক করা হয়েছে? জানতে চাইলে ওসি জানান, সুনিদিষ্ট অভিযোগের আলোকে তাকে আটক করা হয়েছে।
রাণীশংকৈল থানার ওসি বলেন, সাবেক মেয়র আলমগীর সরকারকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতা প্রচুর চাপ দেন এবং উচ্চবাচ্য কথা বলেন।
ওসি আরো জানান,ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতা মামুন যখন বারবার সাবেক মেয়রকে ছাড়ার কথা বলছিলেন,তখন তাকে জানানো হয়। পুলিশের হেডকোয়ার্টাস থেকে বা পুলিশের উদ্ধর্তন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ পেলে ছাড়ার চেষ্টা করা হবে।একথা শুনে ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতা মামুন থানা ত্যাগ করেন। পরে থানার মুল ফটকে দাড়িয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক ভিডিও বার্তা দেন। সেখানে তিনি বলেন, আওয়ামীলীগের বহি:স্কৃত নেতা ও রাণীশংকৈল পৌরসভার অভিভাবক আলমগীর সরকারকে রাজনৈতিক ট্যাগ ব্যবহার করে গ্রেফতার করে উপজেলা প্রশাসন প্রমাণ করেছে বাংলাদেশ পুনরায় ফ্যাসিবাদ কায়েমের অপচেষ্টা চলছে। এই অন্যায় ও উদ্যোশে প্রণোদিত গ্রেফতারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
তিনি আরও বলেন, আ’লীগের দাগী সন্ত্রাসীদের ধরুক নিরঅপরাধ মানুষকে কেন ধরবে। তিনি বলেন, গতরাত রোববার ১১টায় তার (সাবেক মেয়রের) বাসায় আমি ছিলাম সেখানে একটি চক্র তাকে বলেন, বাসায় থাকতে হলে আপনাকে একলাখ টাকা দিতে হবে। না হলে আপনি বাসায় থাকতে পারবেন না।
মামুন বলেন, তখন আমি বলেছিলাম, আপনি কোন টাকা দিবেন না। অথচ কি হলো সেটা বলার পরের দিন সোমবার রাতে তাকে ধরে নিয়ে আসলো। কোন মামলা নেয়, ওয়ারেন্ট নেয়। তিনি পুলিশকে হুশিয়ারী দিয়ে বলেন, এভাবে চলতে থাকলে আপনাদেরও রাজপথে মোকাবেলা করা হবে।
ছাত্র অধিকার পরিষদের এ নেতা পুলিশের উদ্যোশে বলেন, আ’লীগের প্রত্যয়ন নিয়ে চাকরি নিয়েছেন। আপনাদের টাকা দিলে, মাসোয়ারা দিলে আপনারা ধরবেন না। আর না দিলেই ধরবেন। এই ব্যবসা বন্ধ করুন।
আলমগীর সরকারের রাজনৈতিক পরিচয়। তিনি হোসেনগাঁও ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক হয়ে রাজনীতিতে পা দেন। পরে উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক পদে থাকাকালীন নৌকা প্রতিকে পৌরসভার মেয়র নির্বাচিত হন। এবং ২০১৯ সালের সম্মেলনে তিনি বিনা প্রতিদ্বন্ধিতায় উপজেলা যুবলীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। সে সময় তিনি রাণীশংকৈল পৌরসভার মেয়রের দায়িত্বে ছিলেন। পরে ২০২১ সালে নৌকা প্রতিকের মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র ভোটে অংশ নিয়ে স্বল্প ভোটের ব্যবধানে নৌকা প্রতিকের মেয়র মোস্তাফিজুর রহমানের কাছে হেরে যান। সে সময় বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় তাকে দল থেকে বহিস্কার করেন ঠাকুরগাঁও জেলা যুবলীগ। বহিস্কার হলেও উপজেলা যুবলীগের নিয়ন্ত্রণ ছিল তার হাতেই। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় ৪ আগষ্ট-২০২৪ সালে উপজেলা আ’লীগের দলীয় মিটিংএ তার ভুমিকা ছিল সক্রিয়। তিনি আ’লীগের একজন সক্রিয় কর্মী হিসাবে নিবেদিত ছিলেন। ৫ আগষ্টের পর যখন সনাতন ধর্মের মানুষেরা বিভিন্ন দাবী দাওয়া নিয়ে আন্দোলন সংগ্রাম করছিলেন। সেময় আলমগীর সরকারকে সেসব কর্মসুচিতে সক্রিয় থাকতে দেখা গেছে। মেয়র থাকাকালীন সাংবাদিক নির্যাতনসহ শ্রমিকদের মারপিট জায়গা জমি দখলসহ বিভিন্ন অভিযোগ ছিলো তার বিরুদ্ধে।
কেন্দ্রীয় ছাত্র অধিকার পরিষদের সহ-সভাপতি মামুনুর রশিদ মামুন মুঠোফোনে বলেন, সাবেক মেয়রকে ছাড়াতে যায়নি। তবে কি কারণে কোন মামলায় আটক হয়েছে তা জানতে গিয়েছি। পুলিশ জানিয়েছে সুনিদিষ্ট অভিযোগে আলোকে তাকে আটক করা হয়েছে। তখন চলে এসেছি। তবে ছাড়তে বলিনি। এদিকে তিনি আরো বলেন, আ’লীগ যা করেছে। তা যদি আমরাও করি তাহলে তফাৎ কি হলো বলেন। আমরা হিংসাত্ব রাজনীতি চাই না।
সহকারী পুলিশ সুপার(রাণীশংকৈল সার্কেল) স্নেহাশীস কুমার দাস বলেন, সুনিদির্ষ্ট অভিযোগের আলোকে সাবেক মেয়র আলমগীর সরকার গ্রেফতার করা হয়েছে। অথচ গণ অধিকার পরিষদের ছাত্র সংগঠনের নেতা মামুনুর রশিদ অযাথায় থানায় এসে পুলিশের সাথে উচ্চবাচ্য করেছেন। পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যাপক সমালোচনা করেছেন।
মন্তব্য করুন
